
দ্য ওয়াল ব্যুরো, বীরভূম: জেঠিমার আলমারি থেকে উদ্ধার হল দু’বছরের শিশুর হাত পা বাঁধা নিথর দেহ। হাড়হিম করা এই ঘটনা ঘটেছে বোলপুর থানার কাশীপুর গ্রামে। শিশুর মা-বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয়েছে ওই শিশুর জেঠু ও জেঠিমাকে।
মৃত শিশুটির বাবা মুরশেদ খান জানিয়েছেন, শুক্রবার বিকেল থেকে আচমকাই তাঁর ছেলে আকিবকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। আশেপাশে সমস্ত জায়গায় খোঁজ করেন তাঁরা। পড়শিরাও এলাকায় খোঁজ চালায়। কোথাও না পেয়ে শেষপর্যন্ত সন্ধে নাগাদ বোলপুর থানায় অভিযোগ জানান।
খবর পেয়ে রাতে পুলিশ আসে। পরিবারের সবার সঙ্গে কথা বলেন পুলিশ কর্মীরা। বাড়ির একশো মিটারের মধ্যে একটি পুকুর রয়েছে। কোনওভাবে যদি শিশুটি সেখানে পড়ে যায়, সেই ভেবে ডুবুরি নামানো হয়। কিন্তু খোঁজ মেলেনি। তারপরেই বাড়ির সবার সঙ্গে কথা বলার সময় পুলিশ জানতে পারে বৃহস্পতিবার শিশুটির মায়ের সঙ্গে তুমুল ঝগড়া হয়েছিল শিশুটির জেঠিমা তাজিমা বিবির। তখন তাজিমা বিবির খোঁজ করতে গিয়ে তাঁকে ঘরে পাওয়া যায়নি।
এরপরেই তাজিমা বিবির ঘরে তল্লাশি করে পুলিশ। তার আলমারি থেকে উদ্ধার হয় দু’বছরের ছোট্ট শিশু আকিবের হাত-পা বাঁধা দেহ। কিছুক্ষণের মধ্যেই অবশ্য বাড়িতে ঢোকেন তাজিমা। তাকে দেখতে পেয়েই পড়শিরা চড়াও হয় তার উপর। ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশবাহিনী শিশুটির মৃতদেহ উদ্ধারের সঙ্গে সঙ্গেই তাজিমাকেও আটক করে নিয়ে যায়। পরে শিশুটির বাবা-মায়ের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্ত মহিলা ও তার স্বামীকে।
আকিবের ঠাকুরমা আসলিমাবিবি জানান, বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ বাড়ির উঠোনে সাইকেল নিয়ে খেলছিল আকিব। তার মা ঘরে শুয়েছিল। তিনি বাড়ির বাইরে যাওয়ার আগে আকিবের মাকে ডেকে দিয়ে যান। আসলিমা বলেন,‘‘কিছুক্ষণ পড়েই শুনি বাড়িতে হইচই হচ্ছে। আমার নাতিকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তখন সবাই মিলে ওকে খুঁজতে শুরু করি। বাড়ির আশেপাশে সমস্ত জায়গায় দেখা হয়। পুকুরের পারেও খোঁজা হয়। কোথাও পাওয়া যায়নি।’’
তিনি জানান, বৃহস্পতিবার দুই জায়ে খুব ঝগড়া হয়েছিল। তারই জেরে যে এমন সর্বনাশ হবে কেউ ভাবতে পারেননি। জায়ের উপর রোষেই তাঁর ছেলেকে তাজিমা খুন করে আলমারিতে ঢুকিয়ে রাখে বলে আসলিমা বিবির অভিযোগ।
ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসছে গোটা কাশীপুর গ্রাম। অভিযুক্তের শাস্তি চেয়ে এককাট্টা হয়েছে গোটা এলাকা। পুলিশ জানিয়েছে অভিযোগের ভিত্তিতে ওই মহিলা ও তাঁর স্বামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।