
তৃণমূলের বঙ্গধ্বনি যাত্রার সামনের সারিতে পানশালা কাণ্ডে অভিযুক্ত, তুমুল চাঞ্চল্য জলপাইগুড়িতে
মঙ্গলবার জলপাইগুড়ি পুরসভার সাত নম্বর ওয়ার্ড জুড়ে বঙ্গধ্বনি যাত্রা করল তৃণমূল। এদিন মিছিলের সামনের সারিতে ছিলেন জলপাইগুড়ির পুর প্রশাসক বোর্ডের প্রধান পাপিয়া পাল। ঠিক পেছনের সারিতে ছিলেন পানশালা কাণ্ডে অভিযুক্ত ধরম পাশোয়ান।
দ্য ওয়াল ব্যুরো, জলপাইগুড়ি: তৃণমূলের বঙ্গধ্বনি যাত্রায় পানশালা কাণ্ডে অভিযুক্ত ধরম পাসোয়ানের উপস্থিতি ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়াল জলপাইগুড়ি রাজনৈতিক মহলে। অভিযুক্ত মানেই অপরাধী নয় সাফ জবাব তৃণমূল নেতৃত্বের।
মঙ্গলবার জলপাইগুড়ি পুরসভার সাত নম্বর ওয়ার্ড জুড়ে বঙ্গধ্বনি যাত্রা করল তৃণমূল। এদিন মিছিলের সামনের সারিতে ছিলেন জলপাইগুড়ির পুর প্রশাসক বোর্ডের প্রধান পাপিয়া পাল। ঠিক পেছনের সারিতে ছিলেন কৃষাণ ক্ষেতমজুর সংগঠনের জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি দুলাল দেবনাথ। ঠিক তাঁর পাশেই পানশালা কাণ্ডে অভিযুক্ত ধরম পাসোয়ান। বঙ্গধ্বনি যাত্রায় তাঁর উপস্থিতি ঘিরে বিতর্ক শুরু হয়েছে জলপাইগুড়ির রাজনৈতিক মহলে।
একবার দেখে নেওয়া যাক কে এই ধরম পাসোয়ান?
জলপাইগুড়ি শহরের একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী ধরম পাসোয়ান। যিনি ঠিকাদারি, প্রোমোটারি, হোটেল ও অন্যান্য ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। একসময় কংগ্রেসের নেতা ছিলেন তিনি। পরে তৃণমুলে যোগ দিয়ে জেলা সম্পাদক পদে ছিলেন। গত বছর জলপাইগুড়ি থানা মোড় এলাকায় তার একটি বিলাসবহুল হোটেলের পানশালার সিঙ্গিং বারে কাজ করা মহিলাদের দিয়ে দেহ ব্যবসা করানোর অভিযোগে পুলিশ অভিযান চালিয়ে হোটেল সিল করে দেয়। পরে হাইকোর্ট এর নির্দেশে ফের হোটেল চালু হয়েছে। বর্তমানে তিনি তৃণমুল কৃষাণ ক্ষেতমজুর সংগঠনের জলপাইগুড়ি টাউন ব্লকের সভাপতি ও একইসাথে জেলা কমিটির সহ সভাপতি।
কিন্তু বঙ্গধনি যাত্রায় পানশালা কান্ডে অভিযুক্তকে দেখতে পেয়ে আলোড়ন পড়ে যায় শহরে। বিজেপি যুব মোর্চার জেলা সভাপতি পলেন ঘোষ বলেন, ‘‘আজকে দেখলাম পানশালা কাণ্ডে অভিযুক্ত তৃণমুল নেতা যিনি ওই ঘটনায় জেল খেটেছেন তাঁর নেতৃত্বে জলপাইগুড়ি শহরে বঙ্গধনি যাত্রা করছে তৃণমূল। আর অপরদিকে তৃণমূলের বিধায়ক বলে বেড়াচ্ছেন উত্তরকন্যা অভিযানে শহিদ উলেন রায় নাকি মাতাল ছিলেন। আসলে তৃণমূল দলে এখন আর ভালো লোক নেই। যারা মদ বিক্রি করে, কাটমানি নেয় এইসব লোক তৃণমূলে টিকে আছেন। এদের কান্ড দেখে আমরা অবাক হয়ে যাচ্ছি।’’
জলপাইগুড়ি জেলা কৃষাণ ক্ষেতমজুর সংগঠনের জেলা সভাপতি তথা জলপাইগুড়ি জেলাপরিষদের সহকারী সভাধিপতি দুলাল দেবনাথের অবশ্য সাফ জবাব, ‘‘বিরোধী দল কে কি বলছে তা আমি জানি না। ধরম পাসোয়ান পানশালা কাণ্ডে অভিযুক্ত। কিন্তু প্রমাণিত নয়। বিরোধী দলে এমন অনেকেই আছেন যারা ধর্ষণ, ডাকাতি, চুরির মামলায় অভিযুক্ত। এদের কেউ আবার নির্বাচিত জন প্রতিনিধি। সুতরাং কারও নামে অভিযোগ উঠলেই সে দোষী একথা বলা ঠিক নয়।’’
তাঁর দাবি, ধরম এলাকায় অত্যন্ত জনপ্রিয় ছেলে। তিনি সারাক্ষণ মানুষের জন্য কাজ করেন। আজকের বঙ্গধনি যাত্রায় যে মিছিল হয়েছে তার মূল দায়িত্বে ছিলেন শহর ব্লক ও জেলা কৃষাণ ক্ষেতমজুর সংগঠনের সহ সভাপতি। তাঁকে নিয়োগ করা হয়েছে গৌতম দেব-সহ তৃণমূলের অন্যান্য নেতার অনুমতি নিয়েই। সুতরাং বিরোধীরা যতই অপপ্রচার করুক তাতে তাঁদের কিছুই যায় আসে না।