
বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে মাথায় গুলি, ডালখোলায় সিপিএম কর্মী খুন
স্থানীয়দের দাবি, গুরুচাঁদ রায় এলাকায় সমস্যা হলে সালিশি সভার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতেন। কয়েকদিন আগে ঠিক এরকমই একটি সালিশি সভার নিদানে এলাকার কিছু যুবককে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল। তার প্রতিশোধ নিতেই এই ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে অনুমান এলাকাবাসীর।
দ্য ওয়াল ব্যুরো, উত্তর দিনাজপুর: বাড়ি থেকে ডেকে মাথায় গুলি করে এক সিপিআইএম কর্মীকে খুনের অভিযোগে চাঞ্চল্য ছড়াল ডালখোলা থানার হাসান গ্রামে। পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, মৃতের নাম গুরুচাঁদ রায় (৬০)। মঙ্গলবার রাতে তাঁকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। এরপর খুব কাছ থেকে তাঁর মাথা লক্ষ্য করে গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয় ।
সিপিএম জেলা সম্পাদক অপুর্ব পাল অভিযোগ করেন, তৃণমুল ও বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত। বিজেপি ও তৃণমুল কংগ্রেস নেতৃত্ব অবশ্য এই অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করে ওই সিপিএম কর্মীর মৃত্যু দুঃখজনক বলে জানিয়েছেন।
স্থানীয় সুত্রে খবর, মঙ্গলবার রাতের খাবার খেয়ে নিজের ঘরেই শুয়ে ছিলেন গুরুচাঁদ। সে সময় মধ্য বয়সী দুই যুবক বাইক নিয়ে তাঁর বাড়ির সামনে এসে ডাকাডাকি করলে গুরুচাঁদ বাড়ির বাইরে বেরিয়ে আসেন। সঙ্গে সঙ্গেই আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ওই দুই যুবক তাঁকে খুব কাছ থেকে গুলি করে। ঘটনাস্থলেই তিনি লুটিয়ে পড়েন। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে বিহারের কিষানগঞ্জ শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে ডালখোলা থানার পুলিশ পৌঁছে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রায়গঞ্জ সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।
স্থানীয়দের দাবি, গুরুচাঁদ রায় এলাকায় সমস্যা হলে সালিশি সভার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতেন। কয়েকদিন আগে ঠিক এরকমই একটি সালিশি সভার নিদানে এলাকার কিছু যুবককে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল। তার প্রতিশোধ নিতেই এই ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে অনুমান এলাকাবাসীর।
তবে তৃণমূল ও বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই এই ঘটনায় দায়ী বলে দাবি করেছেন সিপিআইএমের জেলা সম্পাদক অপূর্ব পাল। তাঁর বক্তব্য, ‘‘ওই এলাকায় বিজেপি ও তৃণমুলের বাড়বাড়ন্ত রয়েছে। উনি তাদেরই হিংসার শিকার হয়েছেন। এলাকার মান্য ব্যাক্তি ছিলেন। আমরা এর তীব্র ধিক্কার জানাই। ওই এলাকা এখন দুষ্কৃতীদের অবাধ বিচরণের জায়গা হয়ে উঠেছে। অবিলম্বে এই ঘটনায় যারা জড়িত তাদের পুলিশ গ্রেফতার না করলে আমরা দলীয়ভাবে এলাকাবাসীদের সঙ্গে নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলনে নামব।’’
যদিও বামেদের এই অভিযোগ মানতে নারাজ বিজেপি। বিজেপির জেলা সভাপতি বিশ্বজিৎ লাহিড়ী বলেন, “ঘটনা দুঃখজনক। তবে জেলাজুড়ে বিজেপির সংগঠন বৃদ্ধি হওয়ায় বিরোধীরা অবান্তর অভিযোগ তুলছে। তবে এরসঙ্গে তৃণমুল জড়িত থাকতেও পারে, কারণ বর্তমানে যত দুষ্কৃতী সবাই তৃণমুল কংগ্রেসের। তবে পুলিশ এর তদন্ত কত দুর করতে পারবে জানি না। একমাত্র সিবিআই তদন্ত হলেই সব রহস্য স্পষ্ট হয়ে যাবে।’’ অভিযোগ নস্যাৎ করে জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র সন্দীপ বিশ্বাসের দাবি করেন, ‘‘এই অভিযোগ পুরোপুরি ভিত্তিহীন। তবে পুলিশ তদন্ত করলেই আসল কারণ জানা যাবে।’’