
দুই ফুটপাথবাসীকে পিষে মারার ১৮ দিন পর গলসি থেকে গ্রেফতার মদ্যপ গাড়িচালক
দুর্ঘটনার পরদিন এলাকায় যান ডিএসপি হেড কোয়ার্টার শৌভিক পাত্র। সঙ্গে ছিলেন ট্র্যাফিক আধিকারিকরা। তাঁরা ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেন। কথা বলেন স্থানীয়দের সঙ্গেও। জেলার পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখার্জি বলেন, ‘‘রাস্তার ১৮ পয়েন্টে সিসি ক্যামেরা চেক করে পুলিশ গাড়িটির হদিস পায়। ডিএসি হেডকোয়ার্টার শৌভিক পাত্রের নেতৃত্ব তদন্ত কমিটি গড়া হয়। চালক পুরো মদ্যপ অবস্থায় ছিল। তাছাড়া তিনজন আরোহী সবাই মদ্যপ অবস্থায় গাড়িতে উঠেছিল।’’
দ্য ওয়াল ব্যুরো, পূর্ব বর্ধমান: দুর্ঘটনার ১৮ দিন পর ঘাতক গাড়ি- সহ চালককে গ্রেফতার করল পুলিশ। গত ৬ নভেম্বর রাতে মর্মান্তিক পথ দুর্ঘটনায় দুই ফুটপাতবাসীর প্রাণ যায়। গভীররাতে এই ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনাটি ঘটে বর্ধমান স্টেশন মোড়ে। একটি বেপরোয়া গাড়ি পিষে দেয় দুই ফুটপাতবাসীকে। বর্ধমান ষ্টেশন মোড়ে ওভারব্রিজের তলায় ঘুমিয়ে ছিলেন তাঁরা। ঘাতক গাড়িটিকে সেদিন আটক তো দূরের কথা, কোনও হদিসই মেলেনি। এরপর বর্ধমান থানার পুলিশ দুর্ঘটনার তদন্ত শুরু করে।
গভীররাতে তখন নতুন উড়ালপুলের নীচে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন বেশ কয়েকজন মানুষ। রেলের পুরানো ওভারব্রিজ থেকে একটি চারচাকা গাড়ি তীব্র গতিতে ছুটে গিয়ে উড়ালপুলের নীচে শুয়ে থাকা তিন ফুটপাতবাসীকে চাপা দেয়। তারপর চালক গাড়ি ঘুরিয়ে নিয়ে নবাবহাটের দিকে গতি বাড়িয়ে চলে যায়। তাঁদের উদ্ধার করে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানেই দু’জনকে মৃত ঘোষণা করা হয়। যদিও তাঁদের নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি।
এই দুর্ঘটনার পর ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে গোটা ষ্টেশন এলাকায়। কারণ রাতে অনেকেই নতুন উড়ালপুলের নীচে শুয়ে থাকেন। তারা বেশিরভাগই ভবঘুরে বা ভিখারি। রাতে ভয়াবহ দুর্ঘটনার পর তাঁরা সবাই চিন্তিত হয়ে পড়েন। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাতে ঘুমের মধ্যে চিৎকার শুনতে পান তাঁরা। দেখেন একটা চারচাকা গাড়ি তীব্রগতিতে নবাবহাটের দিকে চলে যাচ্ছে। পরে বুঝতে পারেন, ওই গাড়িটাই দু’জনকে চাপা দিয়েছে। ওই এলাকার ব্যবসায়ীরা বলেন, রাত সাড়ে নটা পর্যন্ত ষ্টেশন এলাকায় ট্র্যাফিক থাকে। তারপর জনবহুল এলাকায় তীব্র গতিতে বাইক থেকে চারচাকা যাতায়াত করে। তার জেরেই এই দুর্ঘটনা।
দুর্ঘটনার পরদিন এলাকায় যান ডিএসপি হেড কোয়ার্টার শৌভিক পাত্র। সঙ্গে ছিলেন ট্র্যাফিক আধিকারিকরা। তাঁরা ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেন। কথা বলেন স্থানীয়দের সঙ্গেও। জেলার পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখার্জি বলেন, ‘‘রাস্তার ১৮ পয়েন্টে সিসি ক্যামেরা চেক করে পুলিশ গাড়িটির হদিস পায়। ডিএসি হেডকোয়ার্টার শৌভিক পাত্রের নেতৃত্ব তদন্ত কমিটি গড়া হয়। চালক পুরো মদ্যপ অবস্থায় ছিল। তাছাড়া তিনজন আরোহী সবাই মদ্যপ অবস্থায় গাড়িতে উঠেছিল।’’
পুলিশ জানতে পারে একটি বারে তারা মদ খায়। তারপর গাড়ি নিয়ে বের হয়। বারের মালিকের কাছ থেকেও বেশ কিছু তথ্য সংগ্রহ করেন তদন্তকারী আধিকারিক। ধৃত চালকের নাম মানোয়ার সেখ। তার বাড়ি বাজেপ্রতাপপুরের দুবরাজদীঘি এলাকায়। তাকে গলসি থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। দুর্ঘটনার পর পালিয়ে গিয়ে এখানেই আশ্রয় নিয়েছিল ওই ব্যক্তি। ধৃতের বিরুদ্ধে ৩০৭ ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ। খোঁজ চলছে বাকি তিনজনের।