
দ্য ওয়াল ব্যুরো, জলপাইগুড়ি: শেষ হয়েও যেন শেষ হয় না তিস্তার ধারে দুর্গার আরাধনা। ভান্ডানীর পর ফের একদিনের দুর্গাপুজোয় মাতল তিস্তাপাড়।
বৈকুন্ঠপুর রাজবাড়িতে শারদীয়া দুর্গাপুজোর পর ময়নাগুড়ি-সহ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় মা দুর্গা ভান্ডানী রূপে পূজিতা হবার পর মহারাজ ঘাটের দুর্গাপুজোকে ঘিরে ফের একবার মেতে উঠল জলপাইগুড়ি জেলার বৈকন্ঠপুরের জঙ্গল সংলগ্ন এলাকা। পুরোহিত বিষ্ণু চক্রবর্তী জানালেন তিনি গত ৩৯ বছর ধরে এই পুজোর সঙ্গে যুক্ত। পাঁচ দিন ধরে নয়, এখানে দুর্গা আরাধনা হয় একদিন। দেবী দুর্গার সঙ্গে থাকেন লক্ষ্মী, সরস্বতী, গনেশ, কার্তিক। থাকেন জয়া আর বিজয়া। এবারে ১৩৯ বছরে পা দিল মহারাজ ঘাটের দুর্গাপুজো।

আগে যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিল অত্যন্ত খারাপ। ফলে ইচ্ছে থাকলে যখন তখন শ্বশুরবাড়ি থেকে বাপের বাড়ি আসতে পারতেন না মেয়েরা। অনেকেই দুর্গাপুজোর সময় মন চাইলেও বাপের বাড়ি আসতে পারতেন না। শোনা যায় তাঁদের কথা ভেবেই স্থানীয় লোকেরা বৈকুন্ঠপুরের রাজার অনুমতি নিয়ে এই এলাকায় দুর্গাপুজো শুরু করেন। ১৩৯ বছরের এই পুজোকে ঘিরে অপূর্ব নিয়ম চালু আছে মহারাজ ঘাট এলাকায়। এই এলাকার মেয়েদের যাঁদের বাইরে বিয়ে হয়েছে বা কর্মসূত্রে বাইরে থাকেন তাঁদের অতি অবশ্যই উপস্থিত থাকতে হয় এই সময়। পুজোর আনন্দ নিয়ে আবার যে যার ঘরে ফিরে যায়। কিন্তু এবারে করোনা আবহে বেশিরভাগ মেয়েরাই বাপেরবাড়ি আসতে পারেননি। তাই সবার সঙ্গে সবার দেখা হচ্ছে না। ফলে মনভার তাঁদের।

এই পাড়ারই মেয়ে গার্গী রায় বললেন, ‘‘বছরভর এই দিনটির জন্য অপেক্ষা করি আমরা। সবাই নতুন শাড়ি পরে পুজো দেওয়ার পর আড্ডা, গল্প, মেলায় ঘুরে খুব হৈচৈ করে যে যার শ্বশুরবাড়ি ফিরে যাই। কিন্তু এবারে অনেকেই আসেনি। পাশাপাশি মেলাও হচ্ছে না। কিন্তু পুজো হল খুব নিয়ম নিষ্ঠার সঙ্গে।’’
পুজো কমিটির সদস্য বিনয় কুমার রায় জানালেন এবারে সরকারি গাইড লাইন মেনে হাতেগোনা কয়েকজনকে একসঙ্গে পুজো প্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে। ভাইরাস সংক্রমণের কথা মাথায় রেখে মেলা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আগামী বছর ফের মেলা হবে।