
সাত বছরে ২৯ বার, ফের ডুয়ার্সে স্কুলের গেট ভেঙে মিড ডে মিলের চাল খেয়ে গেল হাতি
মঙ্গলবার গেট ভেঙে স্কুলে ঢুকে রান্নাঘর ভেঙে মিড ডে মিলের কয়েক বস্তা চাল সাবার করে ফের জঙ্গলে ফিরে যায় গজরাজ। বারবার হাতির হামলায় বিপর্যস্ত জনতা জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ায় ডুয়ার্সের শুল্কা পাড়া এলাকায়।
দ্য ওয়াল ব্যুরো, জলপাইগুড়ি: কখনও বাহুবলী এসে হামলা চালায় তো কখনও আবার ওয়ান্টেড। গত সাত বছরে একই স্কুল ২৯ বার ভাঙল বুনো হাতি।
মঙ্গলবার গেট ভেঙে স্কুলে ঢুকে রান্নাঘর ভেঙে মিড ডে মিলের কয়েক বস্তা চাল সাবার করে ফের জঙ্গলে ফিরে যায় গজরাজ। বারবার হাতির হামলায় বিপর্যস্ত জনতা জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ায় ডুয়ার্সের শুল্কা পাড়া এলাকায়।
মিডডে মিলের চাল খাবার লোভে ডুয়ার্সের খয়েরকাটার জঙ্গল থেকে নাগরকাটা ব্লকের শুল্কাপাড়া গ্রামপঞ্চায়েত এলাকার টন্ডু টিজি এসপি প্রাইমারি স্কুলের তাণ্ডব চালায় একটি বুনো দাঁতাল হাতি। অভিযোগ এ নিয়ে পরপর ২৯বার ঐ স্কুলটিতে ভাঙচুর চালিয়েছে বুনো হাতি ।
খবর পেয়ে স্কুল পরিদর্শনে আসেন জলপাইগুড়ি জেলাপরিষদের বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ গনেশ ওঁরাও, তৃণমূলের নাগরাকাটা ব্লক যুব সভাপতি গোবিন লামা ও শুল্কাপাড়া যুব অঞ্চল সভাপতি মোবারক আলি। তাঁদের ঘেরাও করে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখান এলাকার মানুষ।
স্কুলের শিক্ষক রাজা হোসেন আনসারি বলেন, ‘‘এই নিয়ে গত কয়েকবছরে আমাদের স্কুলে ২৯ বার হাতি হামলা চালিয়েছে। আমরা কোনও সাহায্য পাইনি। এবারের হামলায় স্কুলে ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়েছে হাতিটি। করোনা পরিস্থিতি কাটলে এই ভাঙা বিল্ডিংয়ে ক্লাস চালু হলে যে কোনও সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। অবিলম্বে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষর দেখা উচিৎ।’’
স্থানীয় বাসিন্দা মঙলা দাস ওঁড়াও বলেন, ‘‘বার বার হাতির হামলার ঘটনা ঘটলেও প্রশাসন কখনই হাতির উপদ্রব কমানোর ব্যবস্থা করেনি। আমরা এই ঘটনার স্থায়ী সমাধান চাই।’’
ঘটনার সরজমিন তদন্তে এসে বিক্ষোভের মুখে পড়েন তৃণমূল নেতা গোবিন লামা। তিনি বলেন, ‘‘এই স্কুলে গত কয়েক বছরে কখনও বাহুবলী কখনও আবার ওয়ান্টেড নামে বুনো হাতি এসে হামলা চালিয়েছে। এই নিয়ে মোট ২৯ বার হাতি হামলা চালিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে বন দফতর উদাসীন।’’
জেলাপরিষদের বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ গনেশ ওঁড়াও বলেন, ‘‘এই এলাকায় প্রচুর আদিবাসী মানুষ থাকে। তাঁদের সন্তানেরা এই স্কুলে পড়ে। আদিবাসী উন্নয়নে সরকারের এত প্রকল্প থাকা স্বত্তেও এখানে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। এছাড়া সম্প্রতি বন সহায়ক পদে যে নিয়োগ হোলো তাতে বহিরাগতরা চাকরি পেলো। স্থানীয়দের চাকরি দেওয়া হয়নি। স্থানীয়রা চাকরি পেলে আজ এই অবস্থা হোত না। এই এলাকায় বাসিন্দাদের নিয়ে যৌথ বন পরিচালন কমিটি গঠন করা হোক। আমি সরকারের কাছে এই ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করলাম।’’
রেঞ্জার রাজকুমার লায়েক বলেন, ‘‘আমরা আগেও এই স্কুল কর্তৃপক্ষকে মিড ডে মিলের স্টোর রুমটি আন্ডারগ্রাউন্ড করতে অনুরোধ করেছি। ডুয়ার্সে বেশ কয়েকটি স্কুলের স্টোর রুম আন্ডারগ্রাউন্ড করায় তাদের ওখানে হাতির হামলা অনেক কমেছে। আমরা আজ বুধবার পুলিশ, প্রশাসন, স্কুল কর্তৃপক্ষ, রাজনৈতিক দল, স্থানীয় বাসিন্দাদের নিয়ে একটি বৈঠক ডেকেছি। সেখানে ফের বিষয়টি আলোচনা হবে।