
লটারি জিতে রাতারাতি কোটিপতি সুন্দরবনের হতদরিদ্র মৎস্যজীবী
সুন্দরবনের বাসন্তী ব্লকের চড়াবিদ্যা গ্রামপঞ্চায়েতের ৭ নম্বর কুমড়োখালি গ্রামের বাসিন্দা মৎস্যজীবী সুভাষ দোলুই। প্রত্যন্ত এলাকার আর পাঁচজন মৎস্যজীবীর যেমন হয়, জলে কুমীর, ডাঙায় বাঘের সঙ্গে নিত্য লড়াই। সঙ্গে লড়াই দারিদ্রের সঙ্গে। মাছ-কাঁকড়া বিক্রির টাকা থেকে কিছু টাকা সংরক্ষণ করে প্রায় নিয়মিতই কিনে আনতেন লটারির টিকিট। সেটাই নেশা ছিল তাঁর।
দ্য ওয়াল ব্যুরো, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: পেটের টানে প্রতিদিনই সুন্দরবনের নদীখাঁড়িতে কাঁকড়া ধরতে যেতেন। বাজারে বিক্রি করে যে সামান্য অর্থ মিলত, তাতেই কোনওক্রমে চলত স্ত্রী- চার মেয়ে ও মা-বাবাকে নিয়ে অভাবের সংসার। দারিদ্রের সঙ্গে প্রতিদিন যুদ্ধ চললেও স্বপ্ন দেখতেন অলৌকিক কিছুর। তাই মাছ-কাঁকড়া বিক্রি করে ফেরার পথে রোজই কিনে আনতেন লটারির টিকিট। তাতেই বাজিমাত।
সুন্দরবনের বাসন্তী ব্লকের চড়াবিদ্যা গ্রামপঞ্চায়েতের ৭ নম্বর কুমড়োখালি গ্রামের বাসিন্দা মৎস্যজীবী সুভাষ দোলুই। প্রত্যন্ত এলাকার আর পাঁচজন মৎস্যজীবীর যেমন হয়, জলে কুমীর, ডাঙায় বাঘের সঙ্গে নিত্য লড়াই। সঙ্গে লড়াই দারিদ্রের সঙ্গে। মাছ-কাঁকড়া বিক্রির টাকা থেকে কিছু টাকা সংরক্ষণ করে প্রায় নিয়মিতই কিনে আনতেন লটারির টিকিট। সেটাই নেশা ছিল তাঁর।
পয়লা ডিসেম্বর সরবেড়িয়া বাজারে ভীম সর্দারের লটারির দোকান থেকে ডি আর সিকিম কোম্পানির একটি লটারির টিকিট কাটেন সুভাষবাবু। প্রথম পুরস্কার ছিল এক কোটি টাকা। বুধবার লটারি খেলা শেষে সেই কোটি টাকার লটারি জিতে নিলেন সুভাষবাবু। সে খবর পেয়ে কী করবেন ভেবে উঠতে পারছিলেন না। দৌঁড়ে যান স্থানীয় শিক্ষক শিবনাথ মণ্ডলের কাছে। তিনি তৎক্ষনাৎ লটারী কাউন্টারে যোগাযোগ করেন। শিবনাথবাবুর সহযোগিতায় বৃহস্পতিবার লটারি কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করেন। কোটিপতি সুভাষবাবু সাড়া ফেলে দিয়েছেন গোটা সুন্দরবনে।
তাঁর কথায়, ‘‘নদীতে নদীতে কাঁকড়া ধরে বাজারে বিক্রি করে যে টাকা পেতাম তা দিয়ে কোনও মতে সংসার চলে। তবে আমার লটারির টিকিট কাটার একটু নেশা ছিল। গত ১ ডিসেম্বর একটি লটারির টিকিট কেটেছিলাম ডি সিকিম কোম্পানির। যার প্রথম পুরস্কার ছিল এক কোটি টাকা। সেই লটারি খেলা হলে আমার টিকিট নম্বর মিলে যায়। লটারি কোম্পানি থেকে পুরো টাকা পেয়েছি। এই টাকা দিয়ে আমি চার মেয়েকে লেখাপড়া শিখিয়ে মানুষের মতন মানুষ করে তুলব। আর ভাঙাচোরা ঘরটাকে মেরামত করব।’’
লটারি জিতে তাঁর আত্মবিশ্বাস এখন আকাশছোঁয়া। এলাকার দুঃস্থ অসহায় পরিবারের ছেলে মেয়েরা যাতে লেখাপড়া শিখতে পারে তার জন্য এলাকায় আগামী দিনে একটি স্কুল গড়ার স্বপ্ন দেখছেন তিনি।