
দ্য ওয়াল ব্যুরো, জলপাইগুড়ি: রাত পোহালেই জন্মদিন দেশনায়ক সুভাষচন্দ্র বসুর। রাজ্যজুড়ে চলছে তাঁকে স্মরণের প্রস্তুতি। শেষ মুহূর্তের ব্যস্ততা সর্বত্র। দম ফেলার সময় নেই জলপাইগুড়ি শহরের হনুমান মন্দিরের পুরোহিত ও অন্যান্য কর্মীদেরও। একদিন নয়, বছরের ৩৬৫ দিনই অন্যান্য দেবদেবীর সঙ্গে এখানে পুজো পান নেতাজি। তবে ২৩ শে জানুয়ারি দিনটা যে আলাদা। এই দিনটায় এখানে নেতাজির পুজো হয় সাড়ম্বরে। বহু দূর দূর থেকে আসেন নেতাজির ভক্তরা।
জলপাইগুড়ি মাশকলাইবাড়ি এলাকায় এই মন্দির। নানা দেবদেবীর সঙ্গে পূজিত হন দেশনায়ক সুভাষচন্দ্র বসু। গত ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে চলে আসা এই রীতি আজও অটুট রয়েছে এই মন্দিরে।
স্থানীয় সুত্রে জানা যায় ১৯৬৬ সাল নাগাদ মাশকলাইবাড়ি শ্মশান সংলগ্ন এলাকায় এসেছিলেন এক সাধু। এই মন্দির তিনিই নির্মাণ করেছিলেন। পাশেই খড়ের ঘরে থাকতেন। তিনিই এই মন্দিরে অন্যান্য দেবদেবীর সঙ্গে নেতাজী সুভাসচন্দ্র বসুর মর্মর মূর্তি বসিয়ে বছরভর পুজো করতেন। সেই নিয়ম আজও বহাল রয়েছে।
মন্দিরের পুরোহিত অর্জুন দাস বলেন, ‘‘এই মন্দিরে সারাবছর অন্যান্য দেবদেবীর সাথে নেতাজীর পূজো দেওয়া হয়। প্রতিদিন মানুষ এসে এখানে পূজো দেন। আগামীকাল ২৩ শে জানুয়ারি। ওঁনার জন্মদিন। প্রচুর পরিমানে মানুষ আসবে পুজো দিতে।’’

স্থানীয় বাসিন্দা, কংগ্রেসের জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি পিনাকী সেনগুপ্ত বললেন, ‘‘মন্দিরে দেবতার সাধনা করা হয়। আর কিছু কিছু মানুষ থাকেন যাঁরা নিজেদের কাজের জোরে দেবতার স্তরে পৌঁছে যান। দেশনায়ক সুভাষচন্দ্র বসুকে আমরা সেই জায়গায় স্থান দিয়ে থাকি। আমি এই এলাকার বাসিন্দা হবার সুবাদে ছোটবেলা থেকে মন্দিরে এই রেওয়াজ দেখে আসছি। এই দৃশ্য দেখে আজও রোমাঞ্চিত হই।’’
নতুন গাড়ি কিনে মন্দিরে পুজো দিতে এসেছিলেন জলপাইগুড়ির বাসিন্দা শুক্লা রায়। তিনি জানালেন, ‘‘হনুমান মন্দিরে এসে দেখলাম এখানে নেতাজির পূজো হয়। দেখে খুব ভালো লাগলো। আমিও পুজো দিলাম।’’
জলপাইগুড়ি নেতাজী সুভাসচন্দ্র বোস ফাউন্ডেশনের সম্পাদক গোবিন্দ রায় বলেন ‘‘নেতাজী সুভাসচন্দ্র বসুকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ ঈশ্বরজ্ঞানে পূজো করেন। কিন্তু রাজ্যে বিরল এই ধরনের মন্দির। এখানে ৩৬৫ দিন পুজোর পাশাপাশি ২৩ শে জানুয়ারি সাড়ম্ভরে পূজো দেওয়ার রীতি রয়েছে। মানুষের এই ভাবাবেগকে আমরা সম্মান জানাই।’’