
গঙ্গাসাগরের পথে অপহৃত মহারাষ্ট্রের চার পর্যটক, মথুরাপুর থেকে উদ্ধার করল সুন্দরবন পুলিশ
১৪ জানুয়ারি রাত দু’টো নাগাদ সুন্দরবন পুলিশ কন্ট্রোল রুম মারফত খবর আসে মহারাষ্ট্র থেকে আসা গঙ্গাসাগরগামী চারজন পর্যটককে অপহরণ করেছে দুষ্কৃতীরা। ওই পর্যটকদের মুক্তির জন্য দুষ্কৃতীরা ২০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। না দিতে পারলে তাদের প্রাণে মেরে ফেলারও হুমকি দেয়। তদন্তে নেমে পুলিশ তাদের মোবাইলের অবস্থান খতিয়ে দেখে। মথুরাপুর ও রায়দিঘি থানার সীমান্ত লাগোয়া এলাকায় তাদের অবস্থান চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়।
দ্য ওয়াল ব্যুরো, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: গঙ্গাসাগরে পুণ্যস্নানের নামে মহারাষ্ট্র থেকে আসা চার পর্যটককে পণবন্দি করেছিল দুষ্কৃতীরা। ২০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ চেয়ে ফোনও করেছিল। না দিয়ে পারলে তাদের মেরে ফেলা হবে বলে জানিয়েছিল তারা। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। সুন্দরবন জেলা পুলিশের তৎপরতায় ধরা পড়ে গেল তারা। উদ্ধার করা হয়েছে ওই পর্যটকদের।
১৪ জানুয়ারি রাত দু’টো নাগাদ সুন্দরবন পুলিশ কন্ট্রোল রুম মারফত খবর আসে মহারাষ্ট্র থেকে আসা গঙ্গাসাগরগামী চারজন পর্যটককে অপহরণ করেছে দুষ্কৃতীরা। ওই পর্যটকদের মুক্তির জন্য দুষ্কৃতীরা ২০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। না দিতে পারলে তাদের প্রাণে মেরে ফেলারও হুমকি দেয়। তদন্তে নেমে পুলিশ তাদের মোবাইলের অবস্থান খতিয়ে দেখে। মথুরাপুর ও রায়দিঘি থানার সীমান্ত লাগোয়া এলাকায় তাদের অবস্থান চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়।
সুন্দরবন পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার শ্রী বৈভব তিওয়ারির নির্দেশে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (জোনাল) শ্রী সন্তোষ কুমার মণ্ডল, ডিএসপি মন্দিরবাজার, সি আই মন্দিরবাজার সহ মথুরাপুর ও রায়দিঘি থানার পুলিশ যৌথ অভিযান শুরু করে। এরপর মথুরাপুরের প্রত্যন্ত হোগলডাঙা গ্রামের এক নির্জন জায়গা থেকে পর্যটকদের সবাইকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। ধরা পড়ে দুষ্কৃতী দলের ছয় সদস্যই।
পর্যটকদের থেকে পুলিশ জানতে পারে তাঁরা সবাই মহারাষ্ট্রের থানে জেলার বাসিন্দা। ধৃত এক দুষ্কৃতী জামালের সঙ্গে তাঁদের পূর্ব পরিচয় ছিল। জামাল তাঁদের কমখরচে গঙ্গাসাগর ভ্রমণের টোপ দেয়। সেই মত তাঁরা গত ১১ই জানূয়ারি মুম্বই থেকে গঙ্গাসাগরের উদ্দেশে ট্রেনে রওনা দেন। ১৩ তারিখ দুপুর নাগাদ তাঁরা হাওড়ায় পৌঁছন। সেখান থেকে জামাল তাঁদেরকে একটি টাটাসুমো গাড়িতে করে পাথরপ্রতিমার রামগঙ্গায় একটি লজে নিয়ে যায়। সেখানে এক রাত্রি থাকার পর তাদের অন্য একটি গাড়িতে করে সন্ধ্যার দিকে হোকলডাঙায় নিয়ে যায়। সেখানে তাদের একটি নির্জন জায়গায় আটকে রেখে তাঁদের উপর অকথ্য অত্যাচার চালায় ওই দুষ্কৃতীরা। তাঁদের কাছে থাকা প্রায় চল্লিশ হাজার টাকা ও পাঁচটি মোবাইল ফোন তারা ছিনিয়ে নেয় বলে অভিযোগ।

পুলিশ জানিয়েছে, দুষ্কৃতীরা ঢোলাহাট মথুরাপুর ও রায়দিঘি থানা এলাকার বাসিন্দা। পুলিশি জেরায় তারা নিজেদের অপরাধ কবুল করেছে। অপরাধীদের মূল পাণ্ডা ঢোলাহাটের ভগবানপুরের বাসিন্দা বছর তিরিশের জামাল ওরফে সাহাজামাল গাজি দীর্ঘদিন ধরে মুম্বইতে জরির কাজ করে। সেই সূত্রেই তার সাথে পরিচয় হয় পর্যটক দলের একজনের।
এদিন ধৃতদের ডায়মন্ডহারবার আদালতে তোলা হয়। পর্যটকরা বিচারকের কাছে গোপন জবানবন্দি দিয়েছেন। পুলিশের ভূমিকায় উচ্ছ্বসিত উদ্ধার হওয়া পর্যটকরা। স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন তাঁদের পরিবারের লোকজনও। শনিবার সুন্দরবন জেলা পুলিশের উদ্যোগে ওই পর্যটকদের গঙ্গাসাগর ভ্রমণের ব্যবস্থা করা হয়।