
দ্য ওয়াল ব্যুরো, হুগলি: মিছিলে বিতর্কিত ‘গোলি মারো’ স্লোগান তোলায় গ্রেফতার করা হল হুগলির তিন বিজেপি নেতাকে। বুধবার চন্দননগরে বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী তালডাঙা থেকে সার্কাস মাঠ পর্যন্ত একটি র্যালি করেন। সেই মিছিলে পা মেলান বিজেপির বহু নেতা কর্মী। সেই মিছিল থেকেই ওঠে বিতর্কিত ‘গোলি মারো’ স্লোগান।
এর জেরেই বুধবার গভীর রাতে গ্রেফতার করা হল হুগলি জেলা বিজেপি যুব মোর্চার সাংগঠনিক সভাপতি সুরেশ সাউ, ব্যান্ডেল মণ্ডল যুব মোর্চার সভাপতি প্রভাত গুপ্ত ও স্বাস্থ্য সেলের কনভেনার রবিন ঘোষকে। এ দিন রাতে তাঁদের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয় এই তিন বিজেপি নেতাকে। ধৃত নেতাদের বক্তব্য, ‘‘আমরা সেনাবাহিনীকে বলছি দেশের গদ্দারদের গুলি করা হোক!’’
কিন্তু বিষয়টা যে অত সহজ নয় তা বুঝতে পেরে বুধবারই এই স্লোগান তোলার তীব্র নিন্দা করেছিলেন বিজেপি নেতারা। সার্কাস মাঠের জনসভায় বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং জানিয়েছিলেন ‘গোলি মারো’ স্লোগানের সংস্কৃতি বিজেপি দলের নয়। নিন্দা করেন বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্যও। তিনি বলেন, ‘‘দল এই স্লোগান অনুমোদন করে না। এটা বিজেপির স্লোগান নয়। এই ঘটনা নিন্দনীয় কাজ।’’
এরপর এই বিতর্কিত স্লোগানের বিরুদ্ধে নিন্দার ঝড় ওঠে বিভিন্ন রাজনৈতিক মহলে। নড়েচড়ে বসে চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটও। শুভেন্দু অধিকারী, স্বপন দাশগুপ্ত, লকেট চট্টোপাধ্যায়রা যে সারিতে ছিলেন তার পিছনেই উঠেছিল এই স্লোগান। অভিযুক্তদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার করতে বিশেষ দেরি হয়নি পুলিশের।
তবে প্রশ্ন একটাই, মঙ্গলবার একই স্লোগান শোনা গিয়েছিল দক্ষিণ কলকাতায় তৃণমূলের মিছিল থেকেও। নিন্দার ঝড় উঠেছিল তারপরেও। নিন্দা করেছিলেন দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষও। কিন্তু তারপরে গ্রেফতার পর্যন্ত কিন্তু পৌঁছয়নি পুলিশ। বিজেপি নেতারা বলছেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসন এতটাই প্রতিহিংসাপরায়ণ যে দল থেকে নিন্দা করা হলেও বিজেপি কর্মীদের গ্রেফতারে বাধেনি তাদের। একই অন্যায় করে কিন্তু পার পেয়ে গেছে তৃণমূল।’’
বিজেপির রাজ্য সম্পাদক দীপাঞ্জন গুহ বলেন, ‘‘একই স্লোগান দিয়ে বেঁচে গেল তৃণমূল। আর আমাদের তিনটে ছেলেকে পুলিশ তুলে নিয়ে এল। এসব কী হচ্ছে? এখন শুনছি ওঁদের চুরির কেসও দিয়েছে।’’
তৃণমূলের জেলা সভাপতি দিলীপ যাদবের বক্তব্য, ‘‘একটা অন্যায়কে কি আরেকটা অন্যায় দিয়ে জাস্টিফাই করা যায়? আর প্রশাসন যা করেছে সে ব্যাপারে আমাদের কিছু বলার নেই। তবে বিজেপির এই সংস্কৃতি এই রাজ্যের সংষ্কৃতি নয়।’’