
তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে উত্তাল গঙ্গারামপুর, গোলাগুলি, শাসকদলের এক নেতা ও কর্মীর মৃত্যু
জানা গেছে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ গঙ্গারামপুরের সুকদেবপুরে জমি নিয়ে বিবাদ লাগে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর। বচসা থেকে শুরু হয় সংঘর্ষ। শুরু হয় যথেচ্ছ গোলাগুলি। গুলিবিদ্ধ হন সঞ্জিত সরকার নামে এক তৃণমূল কর্মী। মালদহ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়। মারামারি চলাকালীন ধাক্কাধাক্কিতে পড়ে গিয়ে জখম হন কালিপদ সরকার নামে অপর এক তৃণমূল কর্মী। অজ্ঞান হয়ে যান তিনি। তাঁকেও চিকিৎসার জন্য গঙ্গারামপুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখা্নে ডাক্তাররা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
দ্য ওয়াল ব্যুরো, দক্ষিণ দিনাজপুর: তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে উত্তাল হল গঙ্গারামপুর। মৃত্যু হল দুই তৃণমূল কর্মীর। একজনের মাথায় গুলি লাগে বলে জানা গেছে। ধাক্কাধাক্কিতে পড়ে গিয়ে অন্যজনের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি।
জানা গেছে, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ গঙ্গারামপুরের সুকদেবপুরে পার্টি অফিসে একশো দিনের কাজের হিসেবপত্র করা হচ্ছিল। সেখানেই তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর গন্ডগোল বাধে। বচসা থেকে শুরু হয় সংঘর্ষ। শুরু হয় যথেচ্ছ গোলাগুলি। গুলিবিদ্ধ হন সঞ্জিত সরকার নামে এক তৃণমূল কর্মী। তাঁর মাথায় গুলি লাগে। গঙ্গারামপুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় চিকিৎসার জন্য তাঁকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। পথেই মৃত্যু হয় তাঁর।
মারামারি চলাকালীন ধাক্কাধাক্কিতে পড়ে গিয়ে জখম হন কালিপদ সরকার নামে অপর এক তৃণমূল কর্মী। অজ্ঞান হয়ে যান তিনি। তাঁকেও চিকিৎসার জন্য গঙ্গারামপুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখা্নে ডাক্তাররা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।বিষয়টি জানাজানি হতেই এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে বিশাল পুলিশবাহিনী- র্যাফ ও কমব্যাট ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে।
শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব দক্ষিণ দিনাজপুরের নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা। পরিস্থিতি বাগে আনতে এর আগে একাধিকবার বিভিন্ন গোষ্ঠীর নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন স্বয়ং তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বোঝানো থেকে বকাঝকা কিছুই বাদ দেননি । অতি সম্প্রতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় গঙ্গারামপুরে সভা করতে এসেও বিবদমান গোষ্ঠীদের নিয়ে বৈঠক করেন। কিন্তু কিছুতেই কাজের কাজ হয়নি।

মঙ্গলবারের সংঘর্ষে মৃত গঙ্গারামপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কালীপদ সরকার জেলার তৃণমূল চেয়ারম্যান বিপ্লব মিত্রের অনুগামী বলেই পরিচিত ছিলেন। পুলিশ সূত্রে দাবি কালিপদবাবু সুগার ও প্রেসারের রোগী ছিলেন। ধাক্কাধাক্কির সময় হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। অন্যদিকে গুলিতে নিহত সঞ্জিত তৃণমূলের জেলা সভাপতি গৌতম দাসের অনুগামী হিসেবেই পরিচিত।
তৃণমূলের জেলা সভাপতি গৌতম দাস কারও নাম না করে বলেন, ‘‘দলের মধ্যে কেউ একজন নিজের ক্ষমতা দেখানোর জন্য অশান্তি সৃষ্টি করছে।’’ তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে বিপ্লব মিত্র দাবি করেন, এ সবই ভিত্তিহীন অভিযোগ। তিনি জানান কালীপদবাবু অসুস্থ ছিলেন। হার্ট অ্যাটাকেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
ঘটনার পর যে গুলি চালিয়েছে বলে অভিযোগ সেই সুমন দাসের বাড়ি ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেন গ্রামবাসীরা। সুমন অবশ্য বেপাত্তা। জেলার পুলিশ সুপার দেবর্ষি দত্ত জানান, হাতে গোনা কয়েকজনই এই সংঘর্ষে জড়িত। তাঁদের মধ্যে চারজনকে আটক করা হয়েছে। এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।