
জলপাইগুড়িতে বাসের ভিতর জন্ম নিল শিশু, ভালবেসে বিধায়ক নাম রাখলেন রানার
উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার ভাইস চেয়ারম্যান অর্ঘ্য রায় প্রধান বলেন, ‘‘দম্পতি জলপাইগুড়ি গিয়েছিল আল্ট্রা সোনোগ্রাফি করাতে। ফেরার পথে প্রসব বেদনা ওঠে। বাসেই তিনি পুত্র সন্তান প্রসব করেন। ড্রাইভার ও কন্ডাকটর অন্তত দ্রুততার সঙ্গে তাদের হাসপাতালে নিয়ে এসেছেন। তাঁদের ধন্যবাদ জানিয়ে ছোট করতে চাই না। শিশুটি সুস্থ থাকুক। ভালো থাকুক।
দ্য ওয়াল ব্যুরো, জলপাইগুড়ি: জলপাইগুড়ি থেকে হলদিবাড়ি ফিরছিল উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার বাস। সে বাসেই জন্ম নিল নবজাতক।
শুক্রবার বিকেলে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী জরিনা বেগমকে নিয়ে জলপাইগুড়ির কদমতলায় গিয়েছিলেন হলদিবাড়ির বেলতলি এলাকার বাসিন্দা রমজান প্রামাণিক। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী আল্ট্রা সোনোগ্রাফি করাতে। ফেরার সময় জলপাইগুড়ি কদমতলা এলাকা থেকে উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার বাসে ওঠেন তাঁরা।
প্রায় ১৫ কিলোমিটার রাস্তা ঝাঁকুনি খেতে খেতে আসার পর আচমকাই প্রসব বেদনা ওঠে জরিনা বেগমের। যন্ত্রণায় চিৎকার করতে থাকেন তিনি। বাস দাঁড় করিয়ে দেন বাস চালক। এগিয়ে আসেন বাসের মহিলা যাত্রীরা। তাঁদের সহযোগিতাতেই বাসের মধ্যেই একটি ফুটফুটে সন্তানের জন্ম দেন জারিনা নামে বছর ২৫ এর ওই বধূ।


এরপর বাস চালক বাস নিয়ে সোজা চলে আসেন হলদিবাড়ি হাসপাতালে। খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে ছুটে আসেন মেখলিগঞ্জের বিধায়ক তথা উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার ভাইস চেয়ারম্যান অর্ঘ্য রায়প্রধান। হলদিবাড়ির বিএমওএইচ ডাক্তার তাপস কুমার দাস বলেন,‘‘বাসের মধ্যে শিশুর জন্ম হয়েছে এমন এক প্রসূতিকে নিয়ে আসা হচ্ছে এই খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স সহ টিম তৈরি ছিল। তাঁরা আসার সঙ্গে সঙ্গে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয় এই টিম। মা ও শিশুকে সেবা শুশ্রূষা করে বেডে নিয়ে আসা হয়। দুজনেই এখন সুস্থ রয়েছে।’’
উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার ভাইস চেয়ারম্যান অর্ঘ্য রায় প্রধান বলেন, ‘‘দম্পতি জলপাইগুড়ি গিয়েছিল আল্ট্রা সোনোগ্রাফি করাতে। ফেরার পথে প্রসব বেদনা ওঠে। বাসেই তিনি পুত্র সন্তান প্রসব করেন। ড্রাইভার ও কন্ডাকটর অন্তত দ্রুততার সঙ্গে তাদের হাসপাতালে নিয়ে এসেছেন। তাঁদের ধন্যবাদ জানিয়ে ছোট করতে চাই না। শিশুটি সুস্থ থাকুক। ভালো থাকুক। বড় হয়ে দেশ ও সমাজের কাজে আসুক এটাই প্রার্থনা করি। সংস্থার তরফে ওই শিশু নাম রাখা হল রানার।’’
বাসে প্রসবযন্ত্রণা ওঠায় প্রাথমিকভাবে বিহ্বল হয়ে পড়েছিলেন ওই দম্পতি। পরে তাঁরা জানান, যে ভাবে সবাই সেই পরিস্থিতিতে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন সে ঋণ কোনওদিনই শোধ করতে পারবেন না তাঁরা।