
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বাংলার রাজনীতিতে কেশপুর পরিচিত নাম। ৯৯ সালে এখান থেকেই দিদি স্লোগান দিয়েছিলেন কেশপুর সিপিএমের শেষপুর। যদিও সেবার হারানো যায়নি বামেদের। বছরের পর বছর ধরে কেশপুর ছিল লাল দুর্গ। সিপিএমের জোনাল অফিস জামশেদ আলি ভবনকে বিরোধীরা বলতেন অস্ত্রাগার।
জমানা বদলের পর সেই কেশপুর হয়ে গেছে তৃণমূলের ঘাঁটি। বৃহস্পতিবার সেখানেই সভা করলেন শুভেন্দু অধিকারী। এদিন ঢালা ভিড় ছিল কেশপুরে। মাঠ ছাপিয়ে মানুষ দাঁড়িয়ে রয়েছেন রাস্তায়। মহিলাদের জমায়েতও ছিল নজরকাড়া। ঐতিহাসিক ভাবে রাজনৈতিক সন্ত্রাস কবলিত কেশপুরে তৃণমূলের বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধের ডাক দেন শুভেন্দু। ভিড়ে ঠাসা মাঠের উদ্দেশে বলেন, “এরা ভীতু পার্টি। একদম ভয় পাবেন না। চোখ দেখালে আঙুল দেখান, ঝাণ্ডার ডান্ডাটা মোটা রাখুন। দেখবেন সব পালাবে।”
কথায় বলে পুলিশ যার, কেশপুর তার। অর্থাত্ যে যখন শাসকদলে থাকে কেশপুর তখন তাদের গড় হয়ে যায়। একটা সময় লাল পতাকা ছাড়া অন্য সব পতাকা নিষিদ্ধ ছিল কেশপুরের মাটিতে। তৃণমূল সরকারে আসার পর সেই এক ছবি। এদিন শুভেন্দুও সে কথার উল্লেখ করেন। তাঁর কথায়, কেশপুরের বদল হয়নি। তবে সরকারে না থেকেও বিজেপি তথা শুভেন্দুর সভায় এই জমায়েতকে তাত্পর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন অনেকে।
বুধবার সন্ধ্যায় হুগলিতে রোড শো আর সভা ছিল শুভেন্দু অধিকারীর। মানকুণ্ডু সার্কাস মাঠের সভা থেকে চন্দননগরের বিধায়ককে তীব্র আক্রমণ শানিয়েছিলেন তিনি। বলেছিলেন, “রাজ্যে অনেক ধরনের কাটমানি চলে। এখানকার বিধায়ক গায়ক গায়িকাদের থেকে কাটমানি খান। সঙ্গীত মেলার নামে।”

বৃহস্পতিবার কেশপুরে সভা ছিল শুভেন্দুর। সেই সভা থেকে শুভেন্দুর খোঁচা স্থানীয় সাংসদকে। নাম না করেই বললেন, “এখানকার সাংসদকে আপনারা লকডাউনে দেখেছেন?” জনতার চিত্কার আসে না…….! এরপরেই শুভেন্দু বলেন, “দেখবেন না! তোমার দেখা নাই রে তোমার দেখা নাই!” প্রসঙ্গত, কেশপুর পড়ে ঘাটাল লোকসভার মধ্যে। সেখানকার সাংসদ অভিনেতা দেব।
গতকাল হুগলি থেকে বলেছিলেন, আরামবাগ আসন বিজেপি জিতেছে কিন্তু জোর করে হারানো হয়েছিল। ১৬টা মেশিন গুণতে দেয়নি। এদিন কেশপুরে দাঁড়িয়ে শুভেন্দু বলেন, “ঘাটালে ভারতী ঘোষ জিততেন যদি না কেশপুরে ভোট লুঠ হত!”
এমনিতে দেবকে নিয়ে তৃণমূলের মধ্যেও ক্ষোভ রয়েছে বলে শোনা যায়। বন্যা রুখতে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান নিয়েও দুবারের সাংসদ কোনও ভূমিকা নেননি বলে অভিযোগ। এদিন নন্দীগ্রাম আন্দোলনের নেতা বলেন, “লোকসভা ভোটের পর এখনকার তৃণমূল ঘরে ঢুকে গেছিল। সব জেলা নেতাদের ফোন সুইচ অফ। আর এমপি তো ভোকাট্টা…..! সেদিন আমি এসেছিলাম।”
যদিও এ নিয়ে দেবের প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি।