
সুজাতা ছুটছেন আলপথ বেয়ে, লাঠি হাতে তেড়ে আসছে পিছনে, হাউমাউ কান্না তৃণমূল প্রার্থীর
দ্য ওয়াল ব্যুরো: মঙ্গলকোটের আলপথ বেয়ে মানস ভুঁইয়ার সেই দৌড় মনে পড়ে?
একুশের ভোটের তৃতীয় দফায় আরামবাগের ধানক্ষেতে সেই ছবিটাই যেন ফিরে এল। আলপথ বেয়ে পড়িমরি করে ছুটছেন তৃণমূল প্রার্থী তথা বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁয়ের স্ত্রী সুজাতা মণ্ডল খাঁ। একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা যাচ্ছে একদল লোক লাঠি, বাঁশ হাতে তাঁর দিকে তেড়ে আসছে। প্রাণভয়ে ছুটছেন সুজাতা। অভিযোগ, আরামবাগের আরান্ডি অঞ্চলে বিজেপির লোকজন এক তরফা ভোট করাচ্ছে। খবর পেয়ে সুজাতা সেখানে গেলে তাঁকে তেড়ে আসে দুষ্কৃতীরা।
কোনও রকমে ধানক্ষেত পেরিয়ে একটি গ্রামে গিয়ে রাস্তায় বসে পড়েন আরামবাগের তৃণমূল প্রার্থী। দেখা যায় গ্রামের মহিলারা ঘেমে নেয়ে এক সা হয়ে যাওয়া সুজাতাকে শীতলপাটির হাত পাখা দিয়ে হাওয়া দিচ্ছে। বোতল থেকে জল খেতে খেতে সুজাতা কাউকে একটা ফোন করে সুজাতা বলছেন, “দাদা ভোটটা বয়কট করো দাদা! এখানকার পুলিশ পুরো বিজেপির হয়ে ভোট করাচ্ছে। ওরা আমাকে প্রচন্ড মেরেছে। কাউকে ভোট যেতে দিচ্ছে না। আমি পাঁচবার গেছি, ঢুকতে পারিনি।”
ফোনে সুজাতাকে আরও বলতে শোনা যায়, “এখানে সব মুসলিম ছেলেরা ভয় পাচ্ছে। আমি বললাম, তোদের মমতাদি এত দিয়েছে তোরা ভয় পাচ্ছিস কেন?”
আরামবাগের রাজনৈতিক বৈশিষ্ট হচ্ছে, এই জনপদ চিরকালই শাসকের দুর্ভ্যেদ্য গড়। বাম জমানায় ছিল সিপিএমের ঘাঁটি। পরিবর্তনের পর রাতারাতি তা হয়ে যায় তৃণমূলের দুর্গ। কিন্ত এদিনের ঘটনা দেখে অনেকেই বলছেন, তাহলে কি নিচুতলায় তৃণমূলের রাস আলগা হয়ে গেছে? প্রসঙ্গত, লোকসভা ভোটে আরামবাগ লোকসভা তৃণমূল জিতেছিল ঠিকই। তবে তা সুতোর ব্যবধানে। আবার তা নিয়ে শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, বারোটা মেশিন গুণতে না দিয়ে জোর করে ভোটে জিতেছে।
তবে রাজনৈতিক মহলের অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে। একজন প্রার্থীকে যদি ভোটের দিন এমন হামলার মুখে পড়তে হয় তাহলে তা খুব একটা সুষ্ঠু ছবি নয়। যদিও আরান্ডি এলাকার বিজেপি নেতাদের বক্তব্য, মানুষ নিজের ভোট নিজে দিচ্ছে। তৃণমূল প্রার্থী লোক ঢুকিয়ে ভোট করাতে এসেছিলেন। স্থানীয় জনতা প্রতিরোধ গড়ে তাঁকে ফিরিয়ে দিয়েছেন। এলাকায় পৌঁছেছে বিরাট পরিমাণ কেন্দ্রীয় বাহিনী।