
দ্য ওয়াল ব্যুরো : চিঠি বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না কংগ্রেসের। গত ৭ অগাস্ট কংগ্রেসের প্রথম সারির ২৩ জন নেতা হাইকম্যান্ডের উদ্দেশে চিঠি লেখেন। তাতে বলা হয়, কংগ্রেসের শীর্ষস্থানে এমন কাউকে চাই যিনি সর্বক্ষণ দলের জন্য সময় দেবেন। যাঁকে দলের কর্মীরা মাঝে মাঝে দেখতে পাবে। এই চিঠিকে কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ হিসাবেই দেখছেন অনেকে। চিঠির নীচে যাঁদের সই আছে, তাঁদের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ আনা হতে পারে বলে শোনা যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে বিক্ষুব্ধরা জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁরা যে কোনও শাস্তি মাথা পেতে নেবেন। তারপরেও দলের প্রতি তাঁদের আনুগত্য বজায় থাকবে।
চিঠিতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে আছেন প্রথম সারির কংগ্রেস নেতা কপিল সিব্বল, শশী তারুর, গুলাম নবি আজাদ, পৃথ্বীরাজ চৌহান, বিবেক তানখা ও আনন্দ শর্মা। চিঠিতে লেখা হয়েছে, কংগ্রেস যৌথ নেতৃত্বে বিশ্বাসী। গান্ধী পরিবারকেও সেই নেতৃত্ব মেনে চলতে হবে। চিঠি নিয়ে কয়েকদিন ধরে কংগ্রেসের অভ্যন্তরে উত্তেজনা ছিল। এই পরিস্থিতিতে সোমবার সকালে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক বসে।
দলের বর্তমান সভানেত্রী সনিয়া গান্ধী স্পষ্ট বলেন, তিনি আর কংগ্রেসকে নেতৃত্ব দিতে আগ্রহী নন। কংগ্রেস এবার গান্ধী পরিবারের বাইরে কাউকে সভাপতি পদে খুঁজে নিক। এরপরেই সরব হন রাহুল। তিনি প্রশ্ন তোলেন, দল যখন মধ্যপ্রদেশ ও রাজস্থানে সংকটের মুখে, সভানেত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন, ঠিক সেই সময়ে এমন চিঠি পাঠানো হল কেন?
শোনা যায়, এর পরেই তিনি বলেন, যাঁরা ওই চিঠিটি লিখেছেন, তাঁরা গোপনে বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন। পরে অবশ্য রাহুল বলেন, তিনি ওই ধরনের মন্তব্য করেননি।
পর্যবেক্ষকদের মতে, চিঠিতে স্বাক্ষরকারীরা এদিন বোঝাতে চেয়েছেন, তাঁরা মনেপ্রাণে কংগ্রেসী। কোনও অবস্থাতেই দলের বিরোধিতা করার কথা চিন্তা করেন না। তাই তাঁরা বলেছেন, শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে দল যদি তাঁদের শাস্তি দেয়, তাহলেও কংগ্রেস ছেড়ে যাবেন না।
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং এদিন সনিয়ার কাছে আর্জি জানান, তিনিই যেন সভানেত্রী থাকেন। যাঁরা হাইকম্যান্ডকে চিঠি লিখেছেন, তাঁদের সমালোচনা করেন তিনি। তাঁর কথায়, “চিঠিটি দুর্ভাগ্যজনক। হাইকম্যান্ডকে দুর্বল করা মানে দলকেই দুর্বল করা।” দলের আর এক প্রবীণ নেতা এ কে অ্যান্টনি বলেন, “চিঠির বিষয়বস্তু খুবই নিষ্ঠুর।” কংগ্রেসের জন্য সনিয়া যে আত্মত্যাগ করেছেন তা মনে করিয়ে দেন অ্যান্টনি। সেই সঙ্গে তিনি রাহুলের কাছে আর্জি জানান, তিনি যেন কংগ্রেস সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন।