
দ্য ওয়াল ব্যুরো, পূর্ব মেদিনীপুর: কয়েক দিন ধরেই বিদ্রোহ চলছিল। দল বদলের কথাও ঘোষণা করেছিলেন প্রকাশ্যে। শেষমেশ বুধবার দুপুরে মেচেদা রেল স্টেশন সংলগ্ন মাঠে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়র উপস্থিতিতে গেরুয়া শিবিরে যোগ দিলেন তৃণমূল নেতা তথা পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ সিরাজ খান।
শুধু সিরাজ খান নয়। তাঁর সঙ্গে আরও শতখানেক তৃণমূল কর্মী বিজেপির ঝান্ডা হাতে তুলে নেন। বিজেপিতে যোগ দিয়েই তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানালেন সিরাজ।
এদিন জেলাপরিষদের খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ বলেন, “নন্দীগ্রামে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন অনগ্রসর শ্রেণির মুসলমানদের জন্য চাকরি ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ সংরক্ষণ করবেন। কিন্তু তা বাস্তবে হয়নি। সংখ্যালঘুদের ভুলিয়ে রেখেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আমি বুঝতে পেরেই দল ছেড়ে আসি।” তাঁর কথায়, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রথম পাঁচ বছরে তবু কিছু কাজ হয়েছিল কিন্তু দিদির দ্বিতীয় দফায় কোনও কাজ হয়নি।”
তৃণমূলের সংখ্যালঘু নেতা বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন, এই ঘটনা রাজনৈতিক ভাবে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন পর্যবেক্ষকদের অনেকে। তবে এ ব্যাপারে তাঁর মতামত স্পষ্ট করে জানিয়েছেন সিরাজ খান। তাঁর কথায়, “বিজেপিকে অনেকে সাম্প্রদায়িক দল বলে। কিন্তু বিজেপি যা বলে সামনাসামনি বলে। আর তৃণমূল কংগ্রেস পিছন থেকে ছুরি মারে।”
এমনিতেই গত ১৫ দিন ধরে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা বাংলার রাজনীতির অন্যতম চর্চার জেলা হয়ে উঠেছে। তার কারণ শুভেন্দু অধিকারী। নন্দীগ্রামের সভা, রামনগরের মেগা শো তারপর মঙ্গলবার খেজুরির পদযাত্রা—পরিবহণমন্ত্রীকে নিয়ে চর্চার শেষ নেই। এই পরিস্থিতিতেই শাসকদলের বড় নেতা যোগ দিয়ে দিলেন বিজেপিতে।
গত লোকসভা ভোটে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় একটিও আসন বিজেপি পায়নি ঠিকই, কিন্তু কাঁথি এবং তমলুকে নজরকাড়া ভোট পেয়েছিল গেরুয়া শিবির। কাঁথিতে তারা ভোট পেয়েছিল ছ’লক্ষ ৩০ হাজারের বেশি এবং তমলুকে বিজেপি প্রার্থী পেয়েছিলেন পাঁচ লক্ষ ৩০ হাজারের বেশি ভোট। ফলে বিধানসভা ভোটে পূর্ব মেদিনীপুরকে অত্যন্ত উর্বর মাটি বoলেই মনে করছেন কৈলাস বিজয়বর্গীয়, দিলীপ ঘোষরা।