
দ্য ওয়াল ব্যুরো : টুলকিট মামলায় গ্রেফতার পরিবেশকর্মী দিশা রবিকে আরও পাঁচদিন নিজেদের হেপাজতে নিতে চেয়েছিল দিল্লি পুলিশ। সোমবার দিল্লি কোর্ট তাঁকে আরও একদিন পুলিশ হেপাজতে রাখার নির্দেশ দিল। এর আগে তিনদিন বিচারবিভাগীয় হেপাজতে ছিলেন দিশা। তার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে এদিন পুলিশ তাঁকে আদালতে পেশ করে। তাদের বক্তব্য, টুলকিট মামলায় অপর দুই অভিযুক্ত নিকিতা জ্যাকব ও শান্তনু মুলুকের সঙ্গে দিশাকে জেরা করা প্রয়োজন। পুলিশের পক্ষের কৌঁসুলি বিকাশ সিং আদালতে বলেন, দিশাকে শাস্তি দেওয়ার জন্য পুলিশ হেপাজতে রাখা হচ্ছে না। পুলিশ হেপাজতে থাকলে তাঁর সুবিধাই হবে। কারণ তিনি এখন অপর দুই অভিযুক্তের ওপরে দোষ চাপাতে চাইছেন। অপর দুই অভিযুক্ত কোর্ট থেকে আগাম জামিন পেয়েছেন।
দিশার আইনজীবী সিদ্ধার্থ আগরওয়াল পুলিশের বক্তব্যের বিরোধিতা করে বলেন, ধৃত পরিবেশকর্মীকে ইতিমধ্যে পুলিশ জেরা করেছে। জেল হেপাজতে থাকলেও পুলিশ তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে। তাঁকে পুলিশ হেপাজতে রাখতে চাওয়া হচ্ছে কেন?
এর আগে গত শনিবার দিশাকে আদালতে পেশ করা হয়। ওইদিন তিনি জামিনের আবেদন করেছিলেন। সেই আবেদনের ওপরে আদালত রায় দেবে মঙ্গলবার।
দিশা আদালতে বলেন, টুলকিট ছিল একটি রিসোর্স ডকুমেন্ট। অর্থাৎ তার মাধ্যমে কোনও পাঠক কৃষক আন্দোলন সম্পর্কে নানা নথির সন্ধান পেতে পারতেন। তিনি জামিনের জন্য আবেদন করেন। দিল্লি পুলিশ সেই আবেদনের বিরোধিতা করে বলে, ওই টুলকিটের মাধ্যমে এমন কয়েকটি সাইটের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল যেখানে ভারত সরকার ও সেনাবাহিনীর নিন্দা করা হয়েছে।
পুলিশের দাবি, ২২ বছর বয়সী ওই পরিবেশকর্মীর সঙ্গে খলিস্তানি সংগঠন পোয়েটিক জাস্টিস ফাউন্ডেশনের যোগযোগ রয়েছে। দিশার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি পুলিশের সঙ্গে সহযোগিতা করছেন না। জামিন পেলে তিনি প্রমাণপত্র নষ্ট করতে পারেন। পুলিশের কৌঁসুলি বলেন, প্রাথমিক তদন্তে দেখা গিয়েছে, টুলকিটের অনেক লেখা, ছবি ও ভিডিও মুছে ফেলা হয়েছে। তদন্ত এখনও প্রাথমিক স্তরে রয়েছে। এই অবস্থায় দিশাকে জামিন দেওয়া ঠিক নয়।
বিচারক ধর্মেন্দ্র রানা প্রশ্ন তোলেন, কেউ যদি অবাঞ্ছিত ব্যক্তির সঙ্গে দেখা করে, তাহলেই কি ধরে নেওয়া যায়, তার খারাপ উদ্দেশ্য ছিল?
বিচারক প্রশ্ন তোলেন, দিশা রবিকে কীভাবে ২৬ জানুয়ারির হিংসার জন্য দায়ী করা যায়? পুলিশ বলে, কোনও ষড়যন্ত্রে সকলেরই সমান ভূমিকা থাকে না। ওই টুলকিটের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে কেউ হিংসাত্মক কিছু ঘটিয়ে থাকতে পারে। এই উত্তরে সন্তুষ্ট না হয়ে দিল্লি পুলিশের কৌঁসুলি তথা অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেলকে বিচারক নির্দেশ দেন, টুলকিটে কী ছিল আদালতে দেখান। কীভাবে তার দ্বারা হিংসায় প্ররোচনা দেওয়া হয়েছিল, তাও ব্যাখ্যা করুন।