
দ্য ওয়াল ব্যুরো : বৃহস্পতিবার শ্রীনগরের অদূরে এইচএমটি এলাকায় টহল দিচ্ছিলেন সেনা জওয়ানরা। এমন সময় জঙ্গিরা তাঁদের লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করে। দুই জওয়ান শহিদ হন। পুলিশ এই খবর জানিয়েছে। কয়েকদিন আগেই জম্মু-শ্রীনগর ন্যাশনাল হাইওয়ের ওপরে নাগরোটা অঞ্চলে জঙ্গি সংগঠন জইশ ই মহম্মদের চক্রান্ত ব্যর্থ করে দেন নিরাপত্তারক্ষীরা। তার কয়েকদিনের মাথায় সন্ত্রাসবাদীরা ফের হামলা চালাল।
গত ১৯ নভেম্বর ভোর থেকেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে জম্মু-শ্রীনগর জাতীয় সড়কের কাছে নাগরোটার টোল প্লাজা এলাকা। পুলিশ ভ্যান লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি গুলি চালাচ্ছিল জঙ্গিরা। পাল্টা জবাব দিতে আসরে নামে সেনাবাহিনী। শুরু হয়ে যায় তুমুল গুলির লড়াই। দুপুর পর্যন্ত সেনা সূত্রে খবর মিলেছে, চার জঙ্গি নিকেশ হয়েছে সেনার গুলিতে। মনে করা হচ্ছে এই চার জঙ্গিই জইশ গোষ্ঠীর। প্রচুর আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়েছে তাদের কাছ থেকে।
১৮ নভেম্বর পুলওয়ামায় গ্রেনেড হামলা করে জঙ্গিরা। এরপরে দক্ষিণ কাশ্মীরের আরও কয়েকটি জায়গায় নিরাপত্তা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল।
আইজিপি (জম্মু) মুকেশ সিং বলেছেন, নাগরোটার বান টোল প্লাজার কাছে একটি ট্রাকে গা ঢাকা দিয়ে পালাবার চেষ্টায় ছিল জঙ্গিরা। মনে করা হচ্ছে উপত্যকায় বড়সড় নাশকতা বাঁধানোর লক্ষ্য ছিল তাদের। বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র ছিল তাদের কাছে। টোল প্লাজায় চেকিং শুরু হলেই পুলিশ ভ্যান লক্ষ্য করে গুলি চালাতে থাকে জঙ্গিরা। পাল্টা জবাব দেয় পুলিশবাহিনীও। এরপরেই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় সিআরপিএফ।
শুরু হয় আরও এক দফা গুলির লড়াই। সেনা সূত্র জানাচ্ছে, ট্রাকটিকে ধীরে ধীরে ঘিরে ফেলা হয়। কোণঠাসা হয়ে পড়ে জঙ্গিরা। মরিয়া হয়ে গুলি চালাতে থাকে। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, চারজন জঙ্গি ছিল ওই ট্রাকে। চারজনকেই খতম করা হয়েছে। তবে কোনও জঙ্গি গা ঢাকা দিয়েছে কিনা সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ট্রাক থেকে ১১টি একে-৪৭ রাইফেল, তিনটি পিস্তল, ২৯টি গ্রেনেড উদ্ধার করা হয়েছে। জম্মু-শ্রীনগর হাইওয়ে আপাতত বন্ধ। নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়েছে নাগরোটা এলাকা।
জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত জম্মু-কাশ্মীরেই অন্তত ২০০ জঙ্গিকে নিকেশ করেছে ভারতীয় বাহিনী। যাদের মধ্যে দু’জন প্রতাপশালী হিজবুল কম্যান্ডার। নিয়ন্ত্রণরেখায় লাগাতার পাক সেনার সংঘর্ষবিরতির মাঝেই একের পর এক জঙ্গি নিধন অভিযানে সাফল্য এসেছে ভারতীয় সেনার। গত মাসেই পুলওয়ামায় সেনার গুলিতে খতম হয়েছে হিজবুলের অপারেশনাল কম্যান্ডার সইফ উল ইসলাম ওরফে ডক্টর সৈফুল্লাহ। কাশ্মীরে হিজবুল গোষ্ঠীর সক্রিয় কম্যান্ডার ছিল সৈফুল্লাহ। রিয়াজ নাইকুর হত্যার পরে হিজবুলের নেটওয়ার্ক ছিল তারই হাতে। এই কম্যান্ডারের মৃত্যু নিঃসন্দেহে জঙ্গি গোষ্ঠীতে একটা বড় ধাক্কা। জম্মু-কাশ্মীরের ডিজিপি দিলবাগ বলেছেন, রিয়াজ নাইকু খতম হওয়ার পরে কাশ্মীরে হিজবুল গোষ্ঠী শুধু নয় অন্যান্য জঙ্গি সংগঠনের অন্তত ২০০ জনকে খতম করা সম্ভব হয়েছে।