
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ১১ হাজার ৩০০ কোটি টাকার ঋণখেলাপির অভিযোগ নিয়ে দেশছাড়া তিনি। খোঁজ মিললেও ফেরানো যায়নি দেশে। ব্রিটেনের আদালতে প্রত্যর্পণের চলছে তাঁর। তিনি নীরব মোদী, মুম্বইয়ের প্রাক্তন ধনকুবের। হিরের ব্যবসা করে মাত্র ৪৬ বছর বয়সে ফোর্বসের ৫৭ জন ধনীর তালিকায় নাম তোলেন তিনি। কিন্তু জালিয়াতির দায়ে এখন তিনি বিচারাধীন। সেই বিচারের শুনানিতেই তাঁর আইনজীবী ক্লেয়ার মন্টগোমেরি মোদীকে ভারতে না ফেরানোর আর্জি করে জানিয়েছেন, গভীর অবসাদে ভুগছেন নীরব মোদী। আত্মহত্যাও করতে পারেন।
ওয়েস্টমিনস্টার কোর্টে সোমবার থেকে শুরু হয়েছে পাঁচ দিনের প্রত্যর্পণের শুনানি। দ্বিতীয় দিনেই বিচারপতি স্যামুয়েল গুজিকে মুম্বাইয়ের আর্থার রোড কারাগারে করোনভাইরাস মামলার পরিসংখ্যান-সহ ভারতীয় সরকারি কারাগারের তথ্য দেওয়া হয়। কারণ মোদীকে দেশে ফেরানো হলে, সেই কারাগারেই রাখা হবে।
এই পরিস্থিতিতে মোদীর আইনজীবী মন্টগোমেরি সওয়াল করেন, ভারতে বিচার ব্যবস্থার অবনতি ঘটেছে এবং সেখানে এই বিষয়টি রাজনীতির পর্যায়ে চলে গেছে। সিবিআই ও ইডি-র নিন্দাও করেন তিনি। পাশাপাশি দাবি করেন, ভারতের জেলগুলির অবস্থা অতি খারাপ। চিকিৎসা বা অন্যান্য জরুরি পরিষেবার অমিল রয়েছে সেখানে। এই পরিস্থিতিতে ভারতে ফিরলে কখনওই ন্যায়বিচার পাওয়া যাবে না বলে হতাশায় ভুগছেন নীরব মোদী। তাই এখন তাঁকে ভারতে পাঠানো হলে তিনি আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে পারেন।
এদিকে নীরব মোদীকে যাতে ভারতে না ফেরানো হয়, এই দাবি করে নীরবের পক্ষে সাক্ষ্য দিতে চলেছেন ভারতের সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি মার্কণ্ডেয় কাটজু। শুক্রবার ভিডিও কনফারেন্সে সাক্ষ্য দেবেন তিনি। তিনিও মোদীর আইনজীবী মন্টগোমেরির সমর্থনেই জানাবেন, ভারতের আদালতে তিনি সঠিক বিচার পাবেন না।
শুধু তাই নয়। পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের ঋণখেলাপিতে অভিযুক্ত নীরব মোদীকে ভারতে আনার বিরুদ্ধে ব্রিটেনের আদালতে এক লিখিত বিবৃতিও জমা দিয়েছেন তিনি। এমনকি সংবাদমাধ্যমকে সেই লিখিত বিবৃতির কথা জানিয়ে বলেছেন, ভারতের মিডিয়া এবং সরকার নীরব মোদীর বিরুদ্ধে থাকায়, ভারতে নীরব মোদীর যথাযথ বিচার পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। তাই তিনি নীরব মোদীর পক্ষে সাক্ষ্য দিতে চলেছেন।
বিচারপতি মার্কণ্ডেয় কাটজু আরও জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ সম্প্রতি একটি সংবাদ সম্মেলনে নীরব মোদীকে অপরাধী বলে ঘোষণা করেছেন। কিন্তু একজন আইনমন্ত্রী কীভাবে কাউকে অপরাধী হিসাবে ঘোষণা করতে পারেন? কোনও ব্যক্তি অপরাধী কিনা, তাঁর বিচার করবে আদালত। এতেই বোঝা যায়, ভারতের বিচারব্যবস্থা প্রভাবিত।