
দ্য ওয়াল ব্যুরো : বুধবার সকালে মহারাষ্ট্রের স্বাস্থ্যমন্ত্রী রাজেশ তোপী বলেছিলেন, তাঁদের রাজ্যে শীঘ্র ভ্যাকসিনের আকাল দেখা দিতে পারে। এদিন সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী এই সম্ভাবনার কথা উড়িয়ে দেন। তিনি বলেন, ভ্যাকসিনের যথেষ্ট সংখ্যক ডোজ স্টকে আছে। কিন্তু বৃহস্পতিবার বিশেষজ্ঞরা কার্যত রাজেশ তোপীর সঙ্গে সুর মিলিয়ে বললেন, শীঘ্রই দেশে করোনা ভ্যাকসিনের অভাব দেখা যেতে পারে।
বৃহস্পতিবার সকালে জানা যায়, তার আগের ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ২৬ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। দৈনিক সংক্রমণ শুধু নয়, করোনা অ্যাকটিভ রোগীর সংখ্যাও ঘুম কেড়ে নিয়েছে স্বাস্থ্যমন্ত্রকের। অ্যাকটিভ কেসের হার সাত শতাংশ, আক্রান্ত ৯ লাখের বেশি। এত বিপুল সংক্রমণ গত বছরও হয়নি দেশে।
গত ২৪ ঘণ্টায় ভাইরাস সংক্রমণে মৃত্যু হয়েছে ৬৮৫ জনের। অথচ এক মাস আগেই দৈনিক মৃত্যু ২০০-র নীচে নেমে গিয়েছিল। তবে মৃত্যুহার এখনও দুই শতাংশের নীচেই আছে।
করোনার এই লাগামছাড়া দশা মহারাষ্ট্র দিয়ে শুরু হয়েছিল। নতুন সংক্রমণ ৩০ হাজার থেকে বাড়তে বাড়তে ৫০ হাজারের চৌকাঠে এসে হাজির হয়েছিল দুদিন আগেই। এখন ফের তা শীর্ষে উঠে গেছে। মহারাষ্ট্রে একদিনেই আক্রান্ত ৬০ হাজারের কাছাকাছি। মুম্বইতে দৈনিক সংক্রমণ ১০ হাজার, পুণেতে ১১ হাজার, মাথায় হাত পড়ে গেছে রাজ্য সরকারের। অন্যদিকে, দিল্লি, কর্নাটক, কেরল, পাঞ্জাব, ছত্তীসগড়, উত্তরপ্রদেশ, তামিলনাড়ুতেও করোনা গ্রাফ গত দু’মাস থেকে সপ্তমে চড়ে আছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক জানিয়েছে, দেশে নতুন করে মোট আক্রান্তের ৮১.৪২ শতাংশই এসেছে এই ৮ রাজ্য থেকে।
মহারাষ্ট্রের স্বাস্থ্যমন্ত্রী রাজেশ তোপী বলেন, “রাজ্যে যে পরিমাণ ভ্যাকসিন মজুত করা আছে, তাতে তিনদিন চলতে পারে। খোদ মুম্বইতেও আগামী তিনদিনের বেশি ভ্যাকসিন দেওয়া যাবে না। আমরা কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছি যাতে দ্রুত আরও ভ্যাকসিন দেওয়া হয়। এই রাজ্যে করোনা সংক্রমণের হার দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি।” পরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী নির্দিষ্ট হিসাব দিয়ে জানান, বুধবার রাজ্যে রয়েছে ভ্যাকসিনের ১৪ লক্ষ ডোজ। তাতে আর তিনদিন চলবে। প্রতিদিন যদি পাঁচ লক্ষ লোককে ভ্যাকসিন দিতে হয়, প্রতি সপ্তাহে আমাদের ৪০ লক্ষ ডোজ ভ্যাকসিন লাগবে।
মুম্বইয়ের মেয়র কিশোরী পেডনেকর বলেন, “আমাদের শহরে ভ্যাকসিনের স্টক শেষ হয়ে এসেছে। আমরা সরকারি হাসপাতালগুলিতেই বেশিরভাগ ডোজ পাঠাচ্ছি। আমাদের এখন এক লক্ষের বেশি কোভিশিল্ড ডোজ আছে। আমাদের স্বাস্থ্যমন্ত্রী কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে কথা বলেছেন।”
হর্ষবর্ধন বলেন, “রাজ্য সরকারের কর্তাব্যক্তিরা দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য করছেন। তাতে মানুষ বিভ্রান্ত হতে পারেন। আতঙ্ক ছড়াতে পারে।”