শেষ আপডেট: 27th February 2022 06:25
ভাইরাস নেই এই ভ্যাকসিনে। একদম খাঁটি উদ্ভিজ্জ প্রোটিন (Plant Vaccine) থেকে তৈরি 'ভেজ ভ্যাকসিন'। বিশ্বে প্রথমবার গাছপালার নির্যাস থেকে ভ্যাকসিন (Vaccine) বানিয়ে নজির গড়ল কানাডার মেডিকাগো ইঙ্ক ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থা। প্রথমে খবর মিলেছিল তামাক পাতা থেকে ভ্যাকসিন বানাচ্ছে মেডিকাগো। অন্যান্য ভ্যাকসিনে যেমন ভাইরাল প্রোটিন নিয়ে ভ্যাকসিন ক্যানডিডেট তৈরি হয়, মেডিকাগোর তৈরি এই ভ্যাকসিনে ভাইরাসের চিহ্নমাত্র নেই। বরং উদ্ভিজ্জ প্রোটিনকে পুরোমাত্রায় কাজে লাগানো হয়েছে। মিৎসুবিশি কেমিক্যালস ও ফিলিপ মরিসের মালিকানাধীন এই সংস্থার তৈরি টিকা ফাইজার ও মোডার্নার এমআরএনএ (mRNA) ভ্যাকসিনের থেকে অনেক আলাদা। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার সম্ভাবনাও কম বলে দাবি করেছেন গবেষকরা। মেডিকাগো ইঙ্কের সঙ্গে এই ভ্যাকসিন তৈরিতে সহযোগিতা করেছে গ্ল্যাক্সোস্মিথ ক্লাইন। কানাডার সরকার এই টিকাকে ছাড়পত্রও দিয়ে দিয়েছে। জানা গেছে, ১৮ থেকে ৬৪ বছর বয়সীদের দেওয়া যাবে এই টিকা। কীভাবে তৈরি হয়েছে ভ্যাকসিন? মেডিকাগোর তৈরি ভ্যাকসিনের নাম কোভিফেনজ (Covifenz)। এই ভ্যাকসিনে গাছপালার নির্যাস থেকে উদ্ভিজ্জ প্রোটিন বের করে তা মেশানো হয়েছে। অন্যান্য ভ্যাকসিনে ভাইরাসের প্রোটিন থেকে ভ্যাকসিন তৈরি করা হয়। সেক্ষেত্রে ভাইরাল প্রোটিন অন্য কোনও ভাইরাসের (কম সংক্রামক) সঙ্গে মিশিয়ে ভেক্টর হিসেবে ব্য়বহার করা যেতে পারে অথবা সরাসরি ভাইরাল প্রোটিন শুদ্ধ করে তা ভ্যাকসিন তৈরিতে কাজে লাগানো যেতে পারে। আরও পড়ুন: ট্যাবলেটই টিকা! করোনা সারাতে ভারতে 'ওরাল পিল ভ্যাকসিন' আনছে আমেরিকা উদ্ভিজ্জ ভ্য়াকসিনে সে ঝামেলা নেই। ভাইরাল প্রোটিনকে নিষ্ক্রিয় করার ঝঞ্ঝাটও নেই। এক্ষেত্রে পুরোপুরি জিন-প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভ্যাকসিন বানানো হয়। কোভিনফেনজ ভ্যাকসিনে ডিএল-আলফা-টোকোফেরল অ্যাডজুভ্যান্ট ব্যবহার করেছেন বিজ্ঞানীরা। তাছাড়া এই ভ্যাকসিনে রয়েছে পটাসিয়াম ফসফেট মোনোবেসিক অ্য়ানহাইড্রাস, অ্যানহাইড্রাস সোডিয়াম ক্লোরাইড, সোডিয়াম ফসফেট ডাইবেসিক অ্য়ানহাইড্রাস। অ্যাডজুভ্যান্ট হল ইমিউনোলজিকাল উপাদান যা ভ্যাকসিনের কার্যক্ষমতা বাড়ায়। এই উপাদান থাকলে ভ্যাকসিন আরও দ্রুত রোগ প্রতিরোধ শক্তি গড়ে তুলতে পারে। গবেষক বলছেন ডিএল-আলফা-টোকোফেরল (DL-alpha-tocopherol) নামে এমন উপাদান ব্যবহার করা হয়েছে যাতে এই টিকা সহজেই আরএনএ সার্স-কভ-২ ভাইরাসকে চিনতে পারে। ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারে। এই ভ্যাকসিনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ঝুঁকিও কম বলে দাবি করেছেন গবেষকরা।