
দ্য ওয়াল ব্যুরো : আপনি মাত্র ২০-২৫ জন বিধায়কের সমর্থন নিয়ে একটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হতে পারেন না। শুক্রবার দিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠকে এভাবে রাজস্থানের বিদ্রোহী নেতা শচীন পাইলটকে আক্রমণ করলেন কংগ্রেস নেতা কপিল সিব্বল। এদিনই হাইকোর্টের রায়ে স্বস্তি পেয়েছেন শচীন। বিচারপতি বলেছেন, আপাতত স্পিকার তিনি অথবা তাঁর অনুগামী কোনও বিধায়কের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারবেন না। এরপরে কপিল সিব্বল বলেন, “শচীন পার্টিকে সকলের সামনে তামাশায় পরিণত করতে পারেন না।”
পরে তিনি বলেন, “আমি শচীনকে একটা কথা জিজ্ঞাসা করতে চাই। আপনি কি মুখ্যমন্ত্রী হতে চান? আমাদের বলুন। এত প্রতিবাদ কীসের? আপনি যদি বলেন, বিজেপিতে যোগ দেবেন না, তাহলে হরিয়ানায় বসে আছেন কেন? আপনি কংগ্রেসের মিটিং-এ আসছেন না কেন?”
কপিল সিব্বল আরও প্রশ্ন করেন, “আপনি কি নিজের দল গড়তে চান? আপনি যা ভাবছেন তা আমাদের বলুন। হোটেলের মধ্যে বসে থাকবেন না।” এরপরে তিনি বলেন, “আপনি কী করতে চান তা নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হচ্ছে। সকলের সামনে আপনি পার্টিকে হাস্যস্পদ করে তুলতে পারেন না। আমরা জানি না আপনি কী ভাবছেন।”
শুক্রবার হাইকোর্টের রায়ের পরেই রাজস্থানে তৎপর হয়ে উঠেছেন অশোক গেহলোট। এদিন তিনি প্রায় ১০০ জন বিধায়ককে নিয়ে রাজভবনে যান। তাঁদের দাবি, সোমবার থেকে বিধানসভার অধিবেশন ডাকতে হবে। সেখানে তাঁরা শক্তিপরীক্ষা দেবেন। গেহলোট বলেন, তিনি আগেই চিঠি লিখে ও ফোনে বিধানসভার অধিবেশন ডাকতে বলেছিলেন। কিন্তু রাজ্যপাল তা নাকচ করে দিয়েছেন।
মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “আমি বৃহস্পতিবার চিঠি লিখে রাজ্যপালকে অনুরোধ করেছিলাম, সোমবার থেকে বিধানসভার অধিবেশন বসুক। জবাবের জন্য আমরা সারা রাত অপেক্ষা করেছি। কিন্তু তিনি জবাব দেননি।” এরপরে গেহলোট অভিযোগ করেন, ওপর থেকে নিশ্চয় রাজ্যপালকে চাপ দেওয়া হচ্ছে। তাঁর কথায়, “আমি জানি না, সামান্য একটা কাজ করতে কে তাঁকে বাধা দিচ্ছে।”
রাজ্যপাল অবশ্য বলেন, তিনি গেহলোটের প্রস্তাব এখনও নাকচ করেননি। তাঁর কথায়, “আমি এখনও এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিইনি। আইন মেনেই যা করার করব।” একটি মহল থেকে শোনা যায়, করোনা অতিমহামারীর জন্যই তিনি এখন অধিবেশন ডাকতে রাজি নন।
২০০ সদস্যের রাজস্থান বিধানসভায় গরিষ্ঠতা পেতে হলে চাই ১০১ টি আসন। কংগ্রেসের বিধায়কের সংখ্যা এর চেয়ে সামান্য বেশি। শচীনের শিবিরে আছেন ১৯ জন বিধায়ক। বিজেপির বিধায়কের সংখ্যা ৭২। এছাড়া কয়েকটি ছোট দল ও নির্দল বিধায়ক মিলিয়ে বিধানসভায় বিরোধীদের পক্ষে আছেন ৯৭ জন।
কংগ্রেস থেকে বার বার অভিযোগ করা হয়েছে, বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে রাজস্থানে সরকার ফেলতে চান শচীন। তিনি অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তাঁরা কংগ্রেস ছাড়ছেন না। দলের নেতৃত্ব পরিবর্তন করাই তাঁদের উদ্দেশ্য। অশোক গেহলোট অভিযোগ করেছেন, বিজেপি টাকা দিয়ে বিধায়ক কিনতে চায়। কংগ্রেসের বহু বিধায়ককে বিপুল অঙ্কের অর্থ দিতে চাওয়া হয়েছে। বিজেপির কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াত কংগ্রেস বিধায়কদের সঙ্গে ডিল করছেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বিরুদ্ধে তদন্ত করছে রাজস্থান পুলিশের স্পেশাল অপারেশন গ্রুপ।